সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

আজ বোনের বিয়ে

আমার কাছে বোন বলতে অন্য এক পৃথিবী। যার সাথে মন খুলে সব বলা যায়। মন খুলে কথা বলা যায়। ঝগড়া করা, খুনসুটি করা যায়। ভালোবাসা, মায়া-মমতা আর আহ্লাদে মুখরিত থাকা যায়। আমি আমার বোনটার সাথে সবকিছুই করি। সে আমার কাছে প্রশান্তির অন্য একরূপ। বোনটাকে আমি আমার ভালোলাগা,খারাপ লাগা; সব কথাই বলি। সেই সুবাদে সে আমার সব কিছুই জানে।

সুনশান-নিস্তব্ধ  রাত। প্রচণ্ড কুয়াশায় ঢেকে আছে পৃথিবী। লো ভলিউমে কানে হেডফোন লাগিয়ে শুনছি "বৃষ্টি পড়ার রিমঝিম শব্দ" ঘুম নেই।
নিঃশব্দ আর্তনাদে পূর্ণ সময়। হাহাকারে প্রতিটি নিঃশ্বাস। কতবার ভুলে যেতে চেয়েছি—"পৃথিবীর সব সম্পর্কই স্থায়ী হয় না কোনোদিন তার জন্য কেঁদে লাভ নেই" বলে প্রবোধ দিতে চেয়েছি নিজেকে, পারি নি। নাহ,পারি নি। ব্যর্থ হয়েছি বারবার। 

বোনটাকে নিজের পাশে শেষবারের মত অনুভব করে ওর দিকে একটা অদ্ভুত প্রশ্ন ছুঁড়ে দিলাম। আমার প্রশ্নটা শুনে সে ফুলস্টপ হয়ে গেলো। ওর
জবাব না দেয়ার ব্যথাটা আমাকে আরেকটু বেশি রক্তাক্ত করলো। ও আমার গা ঘেঁষে বসলো। আমি বোনটার কাঁধে মাথা রেখে কাঁদি। জগতের সবচেয়ে নিরাপদ আশ্রয়স্থল ঐ কাঁধ। আমার আগেই বোঝা উচিত ছিলো। প্রত্যেক জিনিসেরই একটা Pattern থাকে, একটা Period থাকে। সময়ের স্রোতে Amplitude এর Maximum Value Peak এ পৌঁছায়, আবার তা Minimum value তেও নেমে আসে। তখন Negative Value Curve টায় ছিলাম আমি। যন্ত্রণাদায়ক সেই সময়ে বোন পাশে ছিলো। সবসময়ই আগলে রেখেছিলো আমাকে।

অঝোরে কান্না পাচ্ছে আমার। এ কান্নায় বিকট একটা শব্দ হচ্ছে, তবে কেউ শুনতে পাচ্ছে না। কখনও শুনবে না। এরকম কান্নার শব্দ সবাই শুনতে পায় না। বোনটা আর একদিন পর আমাকে ছেড়ে চলে যাবে ভাবতেই কান্না আরও উত্তাল ঢেউয়ের মত আমার অন্তর-নদীতে তোলপাড় তুলছে। বোনটা চলে গেলে কাকে এত-এত বিরক্ত করবো? রাত-বিরেতে কাকে এটা-ওটা তৈরি করতে বলবো? ভোরবেলা স্নেহের পরশে ডেকে দেওয়া, রাতের বিষন্নতা দূর করে কে আমাকে ঘুমোতে বলবে? মন খারাপ হলে আমি কার কাছে বলবো আমার মন খারাপ?

বোনটাকে সবাই ঘিরে বসে আছে। হাতে মেহেদী লাগাচ্ছে। আমার রাগ হচ্ছে। অনেক রাগ। 'কেন আমার বোনকে বিয়ে দিতে হবে' এটা আমার এখনও মাথায় ঢুকছেনা। আমার আপাতত ইচ্ছে হচ্ছে সবকিছু ভেঙ্গে চূর্ণবিচূর্ণ করে দেই। আর ওকে চিৎকার করে বলি তুই কোথাও যাবিনা, তোর বিয়ের দরকার নেই। আমার সহ্য হয় না। আমি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। বোনটাকে দেখলেই মনে হয় আগামীকাল থেকেই ও আর আমাদের বাসায় থাকবে না। ওর সাথে আমার কথা বলতে হবে মোবাইলে। প্রতিদিন ইচ্ছা হলেই ওকে দেখতে পারবো না। রাতে ঘুম না আসলে ওকে ডেকে বলতে পারব না বোন আমার, আমাকে ঘুম পাড়িয়ে দিবি! বলতে পারব না এটা-সেটা রান্না করে খাওয়াবি! নাহ আমি আর ভাবতে পারছি না কিছু!! মোবাইলের স্কিনটাও ভিজে যাচ্ছে...
.
লিখাঃ Asadur Rahman Hadi.

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চিরসত্য

"আজ তুমি যাকে যেভাবে কষ্ট দিচ্ছো, ঠকাচ্ছো, অবহেলা করছো, ইমোশন নিয়ে খেলতেছো, প্রতারণা করছো। ভেবো না যে তুমি পার পেয়ে যাবে। অতটা সোজা মনে করো না। হঠাৎ কোন একদিন আসবে যেদিন তুমি ঠিক একই ভাবে কারোর দ্বারা কষ্ট পাবে, ঠকে যাবে, অবহেলিত হবে, প্রতারিত হবে। আর সেই দিনটা খুব বেশি দূরে নয়... অপেক্ষায় থেকো!! . জানো তো এই পৃথিবীটা কিন্তু গোল। এখানে তুমি যা করবে, যে অন্যায় করবে, যে পাপ করবে, তা ঠিক ঘুরেফিরে কোন একদিন তোমার কাছে চলে আসবেই। আসতে বাধ্য... তোমার কারণে যদি কারোর চোখ থেকে এই ফোটা পানিও পড়ে যায়, অপেক্ষায় থাকো কেউ একজন তোমার চোখ থেকে শত শত ফোটা পানি পড়ার কারণ হবে!! . দিনের পর দিন যার সাথে ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করে আসতেছো। একটু একটু করে একটা মানুষের বিশ্বাস নিয়ে মন মতো খেলতেছো। অথচ ও পাশের মানুষটা তোমার ছলনা কিছুই বুঝতে পারেনি, তাই বলে ভেবো না তুমি জিতে গেছো। অপেক্ষা করো একই ভাবে কেউ না কেউ তোমার ভালোবাসা নিয়ে মিথ্যে অভিনয় করে যাবে, তোমার বিশ্বাস নিয়ে খেলবে!! . আমি নিজেও এটা খেয়াল করেছি।  যদি কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি তো অন্য কোন দিন কেউ একজন তারচেয়েও বেশি খারাপ ব্যবহ

★মিষ্টি ঝগড়া★

- তোমার তো এখানে বসে থাকার কথা ছিলনা!! তবে এখানে কেন বসে আছো? হাদী কে শাসানোর মতো করে কথা গুলো বলতে থাকে অধরা। পাক্কা ১৫ মিনিট ধরে পুরো পার্ক তন্ন তন্ন করে হাদী কে খুজেছে অধরা। দু'জনের দেখা করার কথা ছিলো পার্কের অন্য কোনায় যেখানে অনেক গুলো ফুল গাছ আছে। লাল রঙের ফুল অধরার খুব পছন্দ। হাদী অধরা কে সবসময় লাল রঙের ফুল দিয়েই প্রপোজ করে। পার্কে আসলে যখনই অধরার অভিমান হয় তখন-ই গাছ থেকে একটা লাল ফুল এনে অধরাকে দেয়। আজ সে ধরনের কোনো সুযোগ নেই। অধরার দিকে না তাকিয়েই হাদী জবাব দিতে থাকে। - এখানে অনেক ঘাস আছে তাই বসে আছি। - তুমি কি ছাগল যে ঘাস দেখে বসতে হবে? -আমি ঘাস দেখে বসিনি, ঘাসের উপর বসে আছি। চাইলে তুমিও বসতে পার। - আমি তোমার মত ছাগল না। -আমি জানি তুমি ছাগল না। ছাগলের স্ত্রী লিঙ্গ ছাগী। - কি আমাকে তুমি ছাগী বললে!!!!???? -এখনো বলিনি, তবে ছাগলের বউ ছাগীই হয়। - আমি তোমার বউ না। - আমি তো বলিনি তুমি আমার বউ। - এতো কথা প্যাঁচাও ক্যান? তুমি একটা রামছাগল। - রামছাগলের দাড়ি থাকে। আমি একদম ক্লিন শেভ। - ওহ অসহ্য!!! কেনো যে তোমার মত ইডিয়েটের সাথে প্রেম করি? - আমরা প্রেম করছি না। আমরা

♥ঝগড়াটে মিষ্টি বউ♥

– এই যে মিস্টার বাদাম . কথাটা শুনে বন্ধ মুখ টা হা হয়ে গেলো। পার্কের টুলে বসে বসে বাদাম খাচ্ছি। এমন সময় মেয়েলী কন্ঠে এমন ডাক। এটা নিশ্চই কল্পনার বাইরে। . – এই আমার নাম আছে। আর আপনি অাগন্তুক কোথা থেকে এসে আমাকে মিস্টার বাদাম বলছেন?? – অামি অাপনার নাম জানি না তাই বাদাম খাচ্ছেন দেখে ওটা বললাম। – মাথায় সমস্যা??? – থাকতেও পারে। – ওই অাপনি অামাকে পাগল ভাবছেন?? – হতেও তো পারেন। – অাপনাকে অাপনাকে – কি?? – অামার মাথা। – তো এটা বলতে এরকম করা লাগে?? – ওহহ এই অাপনি কে?? – এতক্ষন যার সাথে ঝগড়া করছেন. – ও মোর খোদা অামারে উঠাই নাও না ক্যান। – দাড়ি বা মই কিছু তো খোদায় দিলো না উঠবেন কি করে?? – অাপনি কি পাবনা থেকে এসেছেন?? – মরতে যাবো পাবনা?? – তো অামাকে মারতে অাসছেন কেন?? – মারতে অাসলে তো সেই কখন মেরে ফেলতাম। – তো কেন এসেছেন?? – অাপনাকে নিতে। – কোথায়?? – পাবনায়। – অাপনার মাথায় সমস্যা অাপনি যান। – অাসুন তো। – কোথায়?? – অামার সাথে। – দেখুন অামার একজনের সাথে দেখা করার কথা। – লাগবেনা সেটা। – অাপনাকে অামি চিনিনা অাপনার সাথে কোথায় যাবো?? – এতক্ষন কথা বলার পরও অচেনা?? – হুমম