সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

♥ঝগড়াটে মিষ্টি বউ♥

– এই যে মিস্টার বাদাম
.
কথাটা শুনে বন্ধ মুখ টা হা হয়ে গেলো।
পার্কের টুলে বসে বসে বাদাম খাচ্ছি। এমন সময় মেয়েলী কন্ঠে এমন ডাক। এটা নিশ্চই কল্পনার বাইরে।
.
– এই আমার নাম আছে। আর আপনি অাগন্তুক কোথা থেকে এসে আমাকে মিস্টার বাদাম বলছেন??
– অামি অাপনার নাম জানি না তাই বাদাম খাচ্ছেন দেখে ওটা বললাম।
– মাথায় সমস্যা???
– থাকতেও পারে।
– ওই অাপনি অামাকে পাগল ভাবছেন??
– হতেও তো পারেন।
– অাপনাকে অাপনাকে
– কি??
– অামার মাথা।
– তো এটা বলতে এরকম করা লাগে??
– ওহহ এই অাপনি কে??
– এতক্ষন যার সাথে ঝগড়া করছেন.
– ও মোর খোদা অামারে উঠাই নাও না ক্যান।
– দাড়ি বা মই কিছু তো খোদায় দিলো না উঠবেন কি করে??
– অাপনি কি পাবনা থেকে এসেছেন??
– মরতে যাবো পাবনা??
– তো অামাকে মারতে অাসছেন কেন??
– মারতে অাসলে তো সেই কখন মেরে ফেলতাম।
– তো কেন এসেছেন??
– অাপনাকে নিতে।
– কোথায়??
– পাবনায়।
– অাপনার মাথায় সমস্যা অাপনি যান।
– অাসুন তো।
– কোথায়??
– অামার সাথে।
– দেখুন অামার একজনের সাথে দেখা করার কথা।
– লাগবেনা সেটা।
– অাপনাকে অামি চিনিনা অাপনার সাথে কোথায় যাবো??
– এতক্ষন কথা বলার পরও অচেনা??
– হুমম
– অন্য একদিন দেখলেতো ঠিকি বলে দিতেন ওই যে ঝগড়াটে।
অার এখন অচেনা।
– অামি একজনের সাথে দেখা করতে এসেছি তার সাথে কথা না বলে কোথাও যাবো না।
– অাচ্ছা তাহলে অামি এখানে বসি??
– না সে হয়তো খারাপ ভাববে।
– সে কে??
– অামার হবু স্ত্রী।
– দেখেছেন কখনো??
– না। মা বাবা বললো এখানে অাসবে। অার অামাকে এখানে দেখা করতে বলেছে।
– না দেখে হবু স্ত্রী????
– বাবা মায়ের ঠিক করা, অামি কিছু বুঝি না তারা সব সময় অামার ভালো চায় তাই নিশ্চই এটাও খারাপ কিছু করবে না।
– অাচ্ছা তার নাম জানেন??
– না। অামি কিছুই জানি না।
– অাপনার নাম কি??
– হাদী। অাপনার??
– অধরা। অাচ্ছা অাপনার কি মনে হয় সে অাসবে??
– ও নাকি খুব ভালো মেয়ে নিশ্চই অাসবে।
– ভালো মেয়ে?? সে যদি অামার মত হয়।
– অাপনার মত???!!!! অামার অার বাড়ি ফিরা হবে না।
– কেনো??
– বাবা মায়ের কথা ফেলতে পারবো না। অার অাপনার মত মেয়ে কে বিয়ে করলে তো জীবন পাবনাতেই কাটাতে হবে তাই অার বাড়ি ফিরা হবে না।
– ওই একদম কথা কম।
– এই অাপনি রেগে যাচ্ছেন কেনো??
– অাপনি কি বললেন?? অামার মত মেয়ে কে বিয়ে করলে পাবনায় কাটাতে হবে?? অাজই অাপনাকে বিয়ে করতে হবে।
– মানে কি?? কাকে বিয়ে করবো??
– অামাকে। অামি বাবা মাকে ফোন করছি।
– অাসলে অাপনি পাগল নাকি??
– চুপ কথা কম, চলো।
– অারে অারে কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন??
– কাজী অফিসে।
শেষ পর্যন্ত টেনে হিচঁড়ে নিয়ে অাসলো কাজী অফিসে। সেখানে গিয়ে অারো অভাক। দুইজন মনে হয় ওর বাবা মা। অার বাকী দুইজন অামার দুনিয়া। মানে অামারা বাবা মা। তারমানে এই সেই মেয়ে?? এটা অাবার ভালো মেয়ে??
কি বিয়ে করতে এলাম ভালো ভাবে নিজের শ্বশুর ঘুষ্ঠি চিনি না।
এই যুগে যেখানে অাগে থেকে মেয়ে ছেলেরা তাদের হবু বৌয়ের মাকে শ্বাশুড়ি বলে সেখানে অামি তাদের চিনিও না। ইহা বোকার কাজই বটে।
.
বিয়ে সম্পন্ন হলো। অামি যেন একটা এলিয়েন। কি থেকে কি ঘটে গেলো??
রুমে যেতে মন চাইছে না। ওই ঝগড়াটে মেয়ে হয়তো অাবার ঝগড়া করবে।
রাত বারোটা রুমে গেলাম। দেখি মেয়েটা বসে বসে কান্না করছে। হটাৎ মনটা কেমন করে উঠলে। জানিনা কেমন যেন খারাপ লাগলো।
কাছে গিয়ে জিজ্ঞাসা করলাম
– কান্না করছেন কেনো??
– অামি কি দোষ করেছি এতখন ধরে বাইরে বসে অাছেন যে, অামি কি খুব খারাপ??
– না না তেমন কিছু না অাপনি ভূল ভাবছেন।
– অাপনি অামাকে অাপনি করে বেলছেন কেনো?? এখনও পর মনে হয়?? যা মনে হয় হোক অামি অাপনাকে ভালোবাসি। স্বামী হিসাবে গ্রহন করেছি। অাপনি কষ্ট দিলেও অামি সহ্য করবো। অামি অাপনাকে ছাড়া বাঁচতে পারবো না।
কথাগুলো কেঁদে কেঁদেই বললো।
অামার মনে হয়তো তার প্রতি ভালোবাসা সৃষ্টি হয়ে গেছে । মুহুর্তের মাঝে মন যেন এই অচেনা মেয়েটির কাছে চলে যায়। না এই মেয়ে কে অবহেলা করা যাবে না। পার্কের একটু ব্যবহার ও এখন ওর মাঝে দেখতে পারছি না।
অাসলে বাবা মা ঠিকিই বলেছে মেয়েটা ভালো।
এই ভালোটাকে সারা জীবন বুকের মাঝে রাখতে চাই।
– অাচ্ছা তুমি কি অামার সাথে চাঁদ দেখবে?? একসাথে? অামাকে তোমার জীবন সাথী হিসাবে সারা জীবন এভাবে রাখবে??
– অামি সেটা অাগেই বলে দিয়েছি।
– অামি কি তোমাকে জড়িয়ে ধরতে পারি??
– নিশ্চই তোমাকে পাবনায় দিয়ে অাসতে হবে।
– কেনো??
– সব কিছু অামাকে জিজ্ঞেস করো যে ওই জন্য।
– তাহলে চলো দুজনই পাবনা চলে যাই।
– হাহাহা।
– চাঁদ দেখবে না??
– অাগে এই চাঁদকে ভালো করে দেখি.
– যাহহ লজ্জা লাগছে। বলে অামার বুকে মুখ লুকালো।
অতঃপর দুজনে চাঁদ দেখতে লাগলাম।
নতুন জীবনের শুরুতে খুব ভালো লাগছে। এভাবে যেন সারা জীবন চলে যেতে পারি। স্বাক্ষী থাকলো এই সুন্দর চাঁদ টা।
.
লিখাঃ Asadur Rahman Hadi.

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চিরসত্য

"আজ তুমি যাকে যেভাবে কষ্ট দিচ্ছো, ঠকাচ্ছো, অবহেলা করছো, ইমোশন নিয়ে খেলতেছো, প্রতারণা করছো। ভেবো না যে তুমি পার পেয়ে যাবে। অতটা সোজা মনে করো না। হঠাৎ কোন একদিন আসবে যেদিন তুমি ঠিক একই ভাবে কারোর দ্বারা কষ্ট পাবে, ঠকে যাবে, অবহেলিত হবে, প্রতারিত হবে। আর সেই দিনটা খুব বেশি দূরে নয়... অপেক্ষায় থেকো!! . জানো তো এই পৃথিবীটা কিন্তু গোল। এখানে তুমি যা করবে, যে অন্যায় করবে, যে পাপ করবে, তা ঠিক ঘুরেফিরে কোন একদিন তোমার কাছে চলে আসবেই। আসতে বাধ্য... তোমার কারণে যদি কারোর চোখ থেকে এই ফোটা পানিও পড়ে যায়, অপেক্ষায় থাকো কেউ একজন তোমার চোখ থেকে শত শত ফোটা পানি পড়ার কারণ হবে!! . দিনের পর দিন যার সাথে ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করে আসতেছো। একটু একটু করে একটা মানুষের বিশ্বাস নিয়ে মন মতো খেলতেছো। অথচ ও পাশের মানুষটা তোমার ছলনা কিছুই বুঝতে পারেনি, তাই বলে ভেবো না তুমি জিতে গেছো। অপেক্ষা করো একই ভাবে কেউ না কেউ তোমার ভালোবাসা নিয়ে মিথ্যে অভিনয় করে যাবে, তোমার বিশ্বাস নিয়ে খেলবে!! . আমি নিজেও এটা খেয়াল করেছি।  যদি কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি তো অন্য কোন দিন কেউ একজন তারচেয়েও বেশি খারাপ ব্যবহ

★মিষ্টি ঝগড়া★

- তোমার তো এখানে বসে থাকার কথা ছিলনা!! তবে এখানে কেন বসে আছো? হাদী কে শাসানোর মতো করে কথা গুলো বলতে থাকে অধরা। পাক্কা ১৫ মিনিট ধরে পুরো পার্ক তন্ন তন্ন করে হাদী কে খুজেছে অধরা। দু'জনের দেখা করার কথা ছিলো পার্কের অন্য কোনায় যেখানে অনেক গুলো ফুল গাছ আছে। লাল রঙের ফুল অধরার খুব পছন্দ। হাদী অধরা কে সবসময় লাল রঙের ফুল দিয়েই প্রপোজ করে। পার্কে আসলে যখনই অধরার অভিমান হয় তখন-ই গাছ থেকে একটা লাল ফুল এনে অধরাকে দেয়। আজ সে ধরনের কোনো সুযোগ নেই। অধরার দিকে না তাকিয়েই হাদী জবাব দিতে থাকে। - এখানে অনেক ঘাস আছে তাই বসে আছি। - তুমি কি ছাগল যে ঘাস দেখে বসতে হবে? -আমি ঘাস দেখে বসিনি, ঘাসের উপর বসে আছি। চাইলে তুমিও বসতে পার। - আমি তোমার মত ছাগল না। -আমি জানি তুমি ছাগল না। ছাগলের স্ত্রী লিঙ্গ ছাগী। - কি আমাকে তুমি ছাগী বললে!!!!???? -এখনো বলিনি, তবে ছাগলের বউ ছাগীই হয়। - আমি তোমার বউ না। - আমি তো বলিনি তুমি আমার বউ। - এতো কথা প্যাঁচাও ক্যান? তুমি একটা রামছাগল। - রামছাগলের দাড়ি থাকে। আমি একদম ক্লিন শেভ। - ওহ অসহ্য!!! কেনো যে তোমার মত ইডিয়েটের সাথে প্রেম করি? - আমরা প্রেম করছি না। আমরা