বেডরুমে বসে মেয়েটা টিভির চ্যানেল পাল্টাতে পাল্টাতে বলল, 'একটা লাইসেন্স ওয়ালা পিস্তল কিনতে হবে। টাকা জমাচ্ছি।'
ছেলেটা আয়নার সামনে খুব সুন্দর করে চুলে স্পাইক করছিল। বউয়ের কথা শুনে তার হাত থেমে গেল।
'কি কিনবা?'
'পিস্তল!'
'ক্যান পিস্তল ক্যান?'
'আজকাল দেখি অনেকের স্ট্যাটাসে মেয়ে কলিগরা লুতুপুতু টাইপ কমেন্ট করে। অনেকে আবার তার নিচে লুতুপুতু করেই কমেন্টের জবাব দেয়। এইসব লুতুপুতু বন্ধ করতে পিস্তল দরকার।'
ছেলেটা বলল, 'আরে স্ট্যাটাসে যদি কোন কলিগ কমেন্ট করে সে কি করবে? তাকে কি বলবে এই যে আপনি আর কমেন্ট করবেন না।'
'কমেন্টের জবাব এত পুতুপুতু করে দিলে সে তো কমেন্ট করবেই।'
'মানুষ সামাজিক জীব। তাকে তো সামাজিকতা রক্ষা করতে হবে।'
'একটা সপ্তাহ কি সে ফেসবুক ছাড়া থাকতে পারেনা?'
'পারে যদি একটা সপ্তাহ মেয়েটা সিরিয়াল ছাড়া থাকতে পারে।'
'ok মেয়েটা সিরিয়াল ছাড়া থাকবে।' এই বলে সাথে সাথেই সে টিভি বন্ধ করে দিলো।
'ছেলেটাও তাহলে ফেসবুক ছাড়া থাকবে।' ছেলেটা বলল।
.
.
.
ছেলেটা আইডি ডিএকটিভ করে দিলো।
মেয়েটা সিরিয়াল দেখা বন্ধ করে দিলো। ।
প্রথম ২ দিন খুব কষ্ট হলো দুজনরেই। তারপর ধীরে ধীরে ঠিক হয়ে গেল।
সন্ধ্যায় যে সময়ে আগে মেয়েটা সিরিয়াল দেখতো, সে সময়ে তারা এখন বারান্দায় বসে চা পান করতে লাগলো। হেড়ে গলায় গান ধরে ছেলেটা, যা শুনে মেয়েটা হাসতে হাসতে শেষ।
ছেলেটা রাতে আগে যখন চ্যাট করতো সে টাইমে একসাথে, এক হেডফোনে দুইজন সিনেমা দেখতে লাগলো।
উড়ে চলে গেল ৭ দিন।
৭ দিন পর ছেলেটা ঘুম থেকে উঠে বারান্দায় যেয়ে দেখলো একটা সাইকেল রাখা। এই সাইকেলটা সে অনেকদিন আগে কিনবে ঠিক করছিল। কিন্ত কিনবে কিনবে করে কেনা হচ্ছিল না। সাইকেলের উপর একটা চিরকুট।
'৭ টি অসাধারণ দিন দেয়ার জন্য উপহার। এটি পেয়ে চিৎকার করে ঘুম ভাঙ্গাবা না প্লিজ। পিস্তলের জন্যে যে টাকাটা জমাচ্ছিলাম ওটা দিয়েই এটা কিনছি।'
মেয়েটা জানে না ছেলেটাও একটা গিফট রেখে এসেছে বেডরুমে। ঘুম ভাঙ্গলেই দেখতে পাবে মেয়েটা।
.
লিখাঃ Asadur Rahman Hadi.