সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

মায়াবীনি

বাংলাদেশি মেয়েগুলোর কয়েকটা মায়াবী ব্যাপার আছে,
এরা ছোট বেলায়, কাপড় ছোট টুকরো করে পুতুল আর এর জামাকাপড় বানায়। নিজের পুতুল অন্য বন্ধুর পুতুলের সাথে হাসতে হাসতে বিয়ে দেয়। তারপর মন খারাপ করে বসে থাকে।
যখন আরেকটু বড় হয়, দুনিয়াটা অনেক বড় হয় কিন্তু সেই দুনিয়ায় নিজের বিচরন পরিবার থেকে সীমিত করে দেয়। তখন নিজের একটা কল্পনার জগত হয়। জানালার ধারে একলা বিকেলের সেই গল্পগুলো কখনোই ফুরোয় না।
যখন স্কুলে পড়ে, তখন একটু পছন্দের ছেলের সাথে চোখাচোখি দেখা হয়ে গেলে বেশ কিছু সেকেন্ডের জন্য অপলক তাকিয়ে থাকে, কিন্তু যখন পাশ কাটিয়ে চলে যায় তখন মুখে হাত দিয়ে হাসতে হাসতে চলে যায়। আর ওই ছেলেটা হাজার চিন্তা করে বিদ্ধস্ত হয়ে যায়।
বিকেল গুলোতে ছাদে দাড়িয়ে আকাশ দেখে, আর আশেপাশের ছাদ গুলোতে ওদের দেখার জন্য অনেক ছেলে লুকিয়ে দাড়িয়ে থাকে। বান্ধবীর সাথে গল্প করতে করতে ইচ্ছে করে জোরে হাসে, আর আড় চোখে তাকিয়ে দেখে পাশের ছাদের ছেলে গুলো তখনো তাকিয়ে আছে কিনা।
স্কুলের সামনের ফুচকার দোকান পেলে সব ভুলে যায়, পাল্লা দিয়ে বাজি ধরে প্লেটের পর প্লেট ফুচকা খায়।
কলেজে ওঠার পর হঠাৎ করে খুব বড় হয়ে যেতে ইচ্ছে করে, বড় দের মত সেজে বাসা থেকে বের হয়। এসময় এদের দিকে কেও খুব মায়া ভরে তাকালে আর সুন্দর করে কথা বললে একদম গলে যায়। আর বেশিরভাগ সময় ভুল করে বসে।
এসময় ওরা যদি জানে ওদেরকে কোন ছেলে পছন্দ করে, তবে তাদের সংখ্যা যেকজনই হোক, মেয়েটা ওদের সামনে দিয়ে মাঝে মাঝেই হেটে আসে যাতে ভুলে না যায়। পরে বন্ধুদের কাছে গল্প করতে গিয়ে হাসতে হাসতে শেষ হয়ে যায়।
কোচিং বা কলেজে খুব ব্রিলিয়ান্ট কাওকে এরা নোটস এর হেল্পের জন্য সুন্দর করে কথা বলে হাতে রাখে, আর ঘুরতে গেলে ওই দুস্ট ব্যাক বেঞ্চার বন্ধুর সাথেই যায়।
দুস্টামি খুব করলেও যখন মন থেকে কাওকে খুব ভালোবেসে ফেলে, তখন তার সামনে গেলে হাত ঘেমে যায়, খুব ইতস্তত বোধ করে, আর ওর এটেনশন নেবার জন্য জোরে হেসে হেসে আড় চোখে খেয়াল করে করে কথা বলে। যখন সরাসরি কথা বলে, তখন কিছুক্ষণ চোখের দিকে অপলক তাকিয়ে থাকে, চোখ ঝাপসা হয়ে যায় আর চোখ নামিয়ে ফেলে।
যখন পছন্দের মানুষটা কথা বলতে বলতে হাত ধরে ফেলে, তখন অনেক কথা মুখে আটকে ভাষা হারিয়ে ফেলে। পাশাপাশি বসে থাকার সময় একটু কাধে মাথা দেবার জন্য প্রায় মরে মরে যায়।
যখন কারো জন্য সাজে, তখন অনেক যত্নে চোখে কাজল পরে। কখনো ছোট্ট টিপ দেয়, এরপর আয়নার দিকে মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকে। প্রিয় মানুষটির কাছে যাবার পর অধীর ভাবে অপেক্ষা করে কখন খেয়াল করবে। যখন সে অপলক তাকিয়ে থাকে, তখন লজ্জায় সে লাল হয়ে যায়।
যখন বৃষ্টি পড়ে, জানালা দিয়ে হাত বের করে হাত ভেজায়, আর যদি ভেজার অনুমতি পায় তবে দুহাত ছড়িয়ে অনেক নিষেধাজ্ঞার জীবনে বৃষ্টির ঠান্ডা শিহরনে শরীরে একটু স্বাধীনতা খুজে পায়।
যখন আজান পড়ে তখন অবচেতন মনে মাথায় কাপড় দেয়। এর মত পবিত্র দৃশ্য আর কিছু হতে পারে না।
অনেক খিধে সত্তেও এরা হাজবেন্ডের অপেক্ষায় বসে থাকে, কষ্ট করে, অভিমান করে, তবু সে দেরিতে ফিরে আসলেও সব ভুলে হাসি মুখে খেতে বসে।
জীবনের অর্ধেক সময়ে এরা নতুন একটা পরিবারে অচেনা কিছু মানুষের সাথে জীবন শুরু করে। নিজের জীবন সাথে সবার মন রক্ষার ভয়ংকর দায়িত্ব কাধে নেয়। অনেক ধরনের খারাপ লাগা থাকে, সব হাসির মুখোশে ঢেকে কাওকে বুঝতে দেয় না। চোয়াল শক্ত করে ভেজা চোখে কোলের বাবুটার জন্য ক্যারিয়ার পর্যন্ত বিসর্জন দিয়ে দেয়।
যখন কেও জানতে চায় কেমন আছে, একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে হাসি মুখে বলে অনেক সুখে আছি।
সে হাসির আড়ালে কত যে বিষাদ সিন্ধু রচনা হয়, তা সবার অগোচরে রয়ে যায়।
.
লিখাঃ Asadur Rahman Hadi.

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

চিরসত্য

"আজ তুমি যাকে যেভাবে কষ্ট দিচ্ছো, ঠকাচ্ছো, অবহেলা করছো, ইমোশন নিয়ে খেলতেছো, প্রতারণা করছো। ভেবো না যে তুমি পার পেয়ে যাবে। অতটা সোজা মনে করো না। হঠাৎ কোন একদিন আসবে যেদিন তুমি ঠিক একই ভাবে কারোর দ্বারা কষ্ট পাবে, ঠকে যাবে, অবহেলিত হবে, প্রতারিত হবে। আর সেই দিনটা খুব বেশি দূরে নয়... অপেক্ষায় থেকো!! . জানো তো এই পৃথিবীটা কিন্তু গোল। এখানে তুমি যা করবে, যে অন্যায় করবে, যে পাপ করবে, তা ঠিক ঘুরেফিরে কোন একদিন তোমার কাছে চলে আসবেই। আসতে বাধ্য... তোমার কারণে যদি কারোর চোখ থেকে এই ফোটা পানিও পড়ে যায়, অপেক্ষায় থাকো কেউ একজন তোমার চোখ থেকে শত শত ফোটা পানি পড়ার কারণ হবে!! . দিনের পর দিন যার সাথে ভালোবাসার মিথ্যে অভিনয় করে আসতেছো। একটু একটু করে একটা মানুষের বিশ্বাস নিয়ে মন মতো খেলতেছো। অথচ ও পাশের মানুষটা তোমার ছলনা কিছুই বুঝতে পারেনি, তাই বলে ভেবো না তুমি জিতে গেছো। অপেক্ষা করো একই ভাবে কেউ না কেউ তোমার ভালোবাসা নিয়ে মিথ্যে অভিনয় করে যাবে, তোমার বিশ্বাস নিয়ে খেলবে!! . আমি নিজেও এটা খেয়াল করেছি।  যদি কখনো কারো সাথে খারাপ ব্যবহার করেছি তো অন্য কোন দিন কেউ একজন তারচেয়েও বেশি খারাপ ব্যবহ

★মিষ্টি ঝগড়া★

- তোমার তো এখানে বসে থাকার কথা ছিলনা!! তবে এখানে কেন বসে আছো? হাদী কে শাসানোর মতো করে কথা গুলো বলতে থাকে অধরা। পাক্কা ১৫ মিনিট ধরে পুরো পার্ক তন্ন তন্ন করে হাদী কে খুজেছে অধরা। দু'জনের দেখা করার কথা ছিলো পার্কের অন্য কোনায় যেখানে অনেক গুলো ফুল গাছ আছে। লাল রঙের ফুল অধরার খুব পছন্দ। হাদী অধরা কে সবসময় লাল রঙের ফুল দিয়েই প্রপোজ করে। পার্কে আসলে যখনই অধরার অভিমান হয় তখন-ই গাছ থেকে একটা লাল ফুল এনে অধরাকে দেয়। আজ সে ধরনের কোনো সুযোগ নেই। অধরার দিকে না তাকিয়েই হাদী জবাব দিতে থাকে। - এখানে অনেক ঘাস আছে তাই বসে আছি। - তুমি কি ছাগল যে ঘাস দেখে বসতে হবে? -আমি ঘাস দেখে বসিনি, ঘাসের উপর বসে আছি। চাইলে তুমিও বসতে পার। - আমি তোমার মত ছাগল না। -আমি জানি তুমি ছাগল না। ছাগলের স্ত্রী লিঙ্গ ছাগী। - কি আমাকে তুমি ছাগী বললে!!!!???? -এখনো বলিনি, তবে ছাগলের বউ ছাগীই হয়। - আমি তোমার বউ না। - আমি তো বলিনি তুমি আমার বউ। - এতো কথা প্যাঁচাও ক্যান? তুমি একটা রামছাগল। - রামছাগলের দাড়ি থাকে। আমি একদম ক্লিন শেভ। - ওহ অসহ্য!!! কেনো যে তোমার মত ইডিয়েটের সাথে প্রেম করি? - আমরা প্রেম করছি না। আমরা

♥ঝগড়াটে মিষ্টি বউ♥

– এই যে মিস্টার বাদাম . কথাটা শুনে বন্ধ মুখ টা হা হয়ে গেলো। পার্কের টুলে বসে বসে বাদাম খাচ্ছি। এমন সময় মেয়েলী কন্ঠে এমন ডাক। এটা নিশ্চই কল্পনার বাইরে। . – এই আমার নাম আছে। আর আপনি অাগন্তুক কোথা থেকে এসে আমাকে মিস্টার বাদাম বলছেন?? – অামি অাপনার নাম জানি না তাই বাদাম খাচ্ছেন দেখে ওটা বললাম। – মাথায় সমস্যা??? – থাকতেও পারে। – ওই অাপনি অামাকে পাগল ভাবছেন?? – হতেও তো পারেন। – অাপনাকে অাপনাকে – কি?? – অামার মাথা। – তো এটা বলতে এরকম করা লাগে?? – ওহহ এই অাপনি কে?? – এতক্ষন যার সাথে ঝগড়া করছেন. – ও মোর খোদা অামারে উঠাই নাও না ক্যান। – দাড়ি বা মই কিছু তো খোদায় দিলো না উঠবেন কি করে?? – অাপনি কি পাবনা থেকে এসেছেন?? – মরতে যাবো পাবনা?? – তো অামাকে মারতে অাসছেন কেন?? – মারতে অাসলে তো সেই কখন মেরে ফেলতাম। – তো কেন এসেছেন?? – অাপনাকে নিতে। – কোথায়?? – পাবনায়। – অাপনার মাথায় সমস্যা অাপনি যান। – অাসুন তো। – কোথায়?? – অামার সাথে। – দেখুন অামার একজনের সাথে দেখা করার কথা। – লাগবেনা সেটা। – অাপনাকে অামি চিনিনা অাপনার সাথে কোথায় যাবো?? – এতক্ষন কথা বলার পরও অচেনা?? – হুমম