হাদী ছেলেটা ক্লাসে ঢুকলেই একটা মিষ্টি গন্ধ পায় সাকি। হালকা মিষ্টি একটা গন্ধ। সবার অলক্ষ্যে লম্বা শ্বাস নেয় সে।
আহ! কি দারুন গন্ধ। গন্ধটার জন্যে কতটা পাগল সেদিনই বুঝেছিল সে, যেদিন হাদী ক্লাসে আসেনি। অস্থির লাগছিল তার।
‘ইস! যদি জানতাম কি পারফিউম ইউজ করে ছেলেটা তাহলে একটা কিনে রাখতাম।’
সুযোগটা এসে গেল সাকির। হাদী সহ আরো পাঁচজনের গ্রুপ স্টাডি শুরু হল।
একদিন সবার আগে হাদী আর সাকি এসে উপস্থিত।
‘আচ্ছা হাদী তুমি কোন পারফিউমটা ইউজ করো?’
‘ইয়ে মানে। ঠিক নেই। একেকদিন একেকটা। কেন?’ থতমত খেলো হাদী। আসলে তেমন কোন পারফিউম ব্যবহার করে না সে।
‘না আমার ছোট ভাইয়ের জন্মদিন। ভেবেছিলাম তাকে একটা কিনে দিবো।’ আসল কথা বলল না সাকি।
.
.
ক্লাস থেকে বের হয়েই দৌড়ে হাদী তার এক বন্ধুর কাছে গেল। হাত তুলে বন্ধুর কাছে গিয়ে বলল,
‘দোস্ত দেখ তো আমার গা দিয়ে কোন পারফিউমের গন্ধ আছে নাকি।’
শ্বাস নিয়ে ওয়াক ওয়াক শুরু করলো তার বন্ধু।
‘আছে আছে। পাঁঠার গন্ধের পারফিউম। শালা খবিশ।’
বেকুব হয়ে গেল হাদী, ব্যাপার কি? সাকি মেয়েটা কোত্থেকে গন্ধ পায়?
সাকিও বুঝতে পারছে না, হাদী কেন বলছে না সে কি পারফিউম ব্যবহার করে।
.
.
সেদিন বিকেলে সাকি শিল্পকলার সামনে দাঁড়িয়ে আছে এক বান্ধবীর অপেক্ষায়। পাশেই ফুটপাথে একতারা বাজিয়ে একটা বাউল গান করছে। তাকে ঘিরে গান শুনছে কিছু ছেলে।
‘ও বন্ধু তুই যখন আসিস,
একটু ভালো বাসিস
ফুলের একটা গন্ধ,
পাই যে আমি খুইজা
চক্ষু দুইটা বুইজা..~~*
মাথা ঘুরে উঠলো সাকির। সে কি ভালোবাসে হাদীকে? কোন পারফিউম না, ওটা প্রেমের গন্ধ? এমন হতে পারে? পরদিন থেকে আড়চোখে খেয়াল করতে লাগলো হাদীকে। আসলেই ছেলেটাকে ভালো লাগে তার।
অদ্ভুত! কি অদ্ভুত!
.
.
তারপর একদিন। ক্লাসে নেই কেউ।
হাদী এসে সামনে দাঁড়ালো সাকির।
‘সাকি আমার বড় আপুর জন্যে একটা পারফিউম কিনতে হবে। তুমি কোন পারফিউমটা ব্যবহার করো বলবে? আসলে তুমি ক্লাসে ঢুকলেই মিষ্টি একটা গন্ধ পাই আমি।’
মাথা নিচু করে হেসে ফেলল সাকি। গাধাটাকে ঐ বাউলের গানটা শোনাতে হবে।
.
.
.
পুনশ্চঃ আজ কাজিনের বাসা থেকে ফিরছিলাম।
পথিমধ্যে এক বাউলের গলায় গানটা শুনেছি আমি। হুবহু না হলেও গানের কথা এই টাইপেরই ছিল। যারা লেখাটা পড়ে ভাবছেন গাঁজাখুরি গল্প, প্রেমের আবার গন্ধ হয় নাকি।
তাদের বলছি, "হয় হয়, প্রিয়জনের কাছে গিয়ে লম্বা শ্বাস নিয়ে দেখুন। আর কোন গন্ধ না পেলে বুঝবেন, হি অর শি ইজ নট দ্যা রাইট পারসন "
উৎসর্গঃ প্রিয় বন্ধু..... ♥F.A. Shaki.
.
লিখাঃ Asadur Rahman Hadi.